বাহুবল, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের বিহারীপুর গ্রামে মুরগের হ্যাচারীর ময়লা-আবর্জনা ও বিষ্টার দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণের প্রতিবাদে হ্যাচারী বন্ধের দাবিতে পুরাতন ঢাকা সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। হ্যাচারীর পরিবেশ বিপর্যয়ে এলাকার অর্ধশত গ্রামের বাসিন্দারা মাছির উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এর প্রতিকারে আবেদন নিবেদন করেও উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত না হওয়ায় এলাকাবাসী রবিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন পালন করেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা সড়ক অবরোধ করলে উভয় পাশে যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রীদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ গিয়াসউদ্দিন ও বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগামী ৫ দিনের মধ্যে পরিবেশ বজায় রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। পরে অবরোধ তুলে নিলে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস আলম চৌধুরী তুষার, সাধারণ সম্পাদক হাজী শামছুল আলম, জেলা জামায়াতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রউফ বাহার, সাবেক ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম দুলাল, সাদিকুল ইসলাম ফারুক, আইয়ুব খান, আব্দুল ওয়াহিদ, সাংবাদিক সাজিদুর রহমান, অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য ও টিপু সুলতান জাহাঙ্গীর, আব্দুল হান্নান মনির, সানাউল হক চৌধুরী সানু, জাহিদ মিয়া,
অভিযোগে জানা যায়, বিহারীপুরে কুইক চিকস এর মোরগের হ্যাচারীর ময়লা আবর্জনা বিষ্টার দুর্গন্ধে মাছির উপদ্রব মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে
আশপাশের অন্তত অর্ধশত গ্রামের বাসিন্দারা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। পরিবেশ দূষণের কারণে এলাকার অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এলাকার ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, ভাদেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পলাতক সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বশির ও জেলা পরিষদ সদস্য আলাউর রহমান সাহেদ ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকলেও স্থানীয় অন্যান্য শিল্প কারখানার মত উক্ত হ্যাচারীর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত লোকজন।
বিহারীপুর হ্যাচারীর ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বশির-সাহেদের প্রতিবেশী বড়গাও গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হক। তাকে স্থানীয় পর্যায়ে সহযোগিতা করছেন ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিরা মিয়া ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর। পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে কথা বললেই ভুক্তভোগীদকে হামলা মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তারা।
অথচ এ হ্যাচারীর কারণে এলাকার বাসিন্দারা ঘরের ভিতর খাওয়া দাওয়া করছেন মশারী টানিয়ে। পাশ্ববর্তী
বিহারীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও কোন সুফল পাননি।
ইদানীং এ হ্যাচারীর ময়ল-আবর্জনায় পরিবেশ দূষিত হয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে মাছির উপদ্রব। বসত-বাড়িতে অবস্থানরত সব শ্রেণীর মানুষ অতিষ্ঠ। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষে থেকে শতাধিক লোকের স্বাক্ষরিত অভিযোগটি গত ২৭ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দায়ের করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ গিয়াসউদ্দিন জানান, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আকবর আলীকে দায়িত্ব দেন।
কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা আকবর আলী শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) অভিযোগকারীদের না জানিয়ে গোপনে হ্যাচারী পরিদর্শন করেন। এতে এলাকাবাসী আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এবং রবিবার দুপুরে হ্যাচারীর সামনে মানববন্ধনের ডাক দেন।